সর্বশেষ সংবাদ
আসল কাজ করে রেখেছিলেন বোলাররা। ইশান কিষান আর শুবমান গিল গেলেন কেবল তুলির শেষ আচড়টা টানতে। স্রেফ ৩৭ বলে লক্ষ্যে পৌঁছে গেল ভারত। শ্রীলঙ্কাকে লজ্জার রেকর্ডে ভাসিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে নিল রোহিত শর্মার দল।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে রোববার ভারতের জয় ১০ উইকেটে। এশিয়া কাপে ভারতের এটি অষ্টম শিরোপা।
টস ভাগ্যে হেসেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই হাসি মিলিয়ে যায় নিমিষেই। ১৫.২ ওভারে স্রেফ ৫০ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। এশিয়া কাপে এটিই সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। সবচেয়ে কম ডেলিভারিতে ৫ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েন সিরাজ। ম্যাচে তার শিকার ২১ রানে ৬ট
প্রতিযোগিতায় এতদিন সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৮৭ রানের। ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সে রেকর্ড ভাঙল শ্রীলঙ্কা। প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে এর আগের সর্বনিম্ন স্কোরটি ছিল ১৭৩ রানের।
দলটির সবচেয়ে বিভিষিকাময় সময় কেটেছে চতুর্থ ওভারে। সিরাজের সেটি দ্বিতীয়। এই ওভারেই ৪ উইকেট তুলে নেন সিরাজ। ছয় ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ১২/৬!
ওভারের প্রথম বলে পয়েন্ট থেকে পাতুন নিশাঙ্কার দুর্দান্ত ক্যাচ নেন রবীন্দ্র জাদেজা। দ্বিতীয় বল ডট। তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার নতুন উইকেটে আসা সাদিরা সামারাবিক্রমা। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি মারকুটে এই ব্যাটার। পরের বলেই কাভারে চারিত আসালাঙ্কার সহজ ক্যাচ নেন ইশান কিষান। হ্যাটট্রিক বলটি মিড-অন দিয়ে বাউন্ডারি মারেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ওভারের শেষ বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান তিনিও।
নিজের পরের ওভারে বোল্ড করে দেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শনাকাকে। তাতেই হয়ে যায় স্রেফ ১৬ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট শিকার। এক প্রান্ত আগলে লড়তে থাকা কুশল মেন্ডিসের মাঝের স্টাম্প ছিটকে দিয়ে ষষ্ঠ শিকার ধরেন এই পেসার। তার বোলিং ফিগার ৭-১-২১-৬। এশিয়া কাপে তার চেয়ে ভালো বোলিং করেছেন কেবল শ্রীলঙ্কার অজান্তা মেন্ডিস, ১৩ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট।
শেষ তিন উইকেট তুলে নেন পান্ডিয়া। এর মধ্যে শেষ দুই বলে তুলে নেন দুটি। সব মিলিয়ে ৩ রানে তার শিকার ৩ উইকেট। ৫০ ওভারের ম্যাচ পরিনত হয় ৫০ রানের ম্যাচে!
লঙ্কান ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছেন পাঁচ ব্যাটার। দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন দুজন। সর্বোচ্চ মেন্ডিসের ১৭। ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন মহীশ থিকশানার জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া দুশান হেমন্ত
রান তাড়ায় ৩ ওভারেই উঠে যায় ৩২ রান। শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী গিল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ২৭ রানে। ১৮ বলে ২৩ রান করেন কিষান।
টস সময়মত হলেও বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হয় ৪০ মিনিট পর। মাত্র ১২৯ বলে শেষ হয় এশিয়া কাপের ফাইনাল। বলের হিসাবে ওয়ানডে ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বনিম্ন ম্যাচ। ২০২০ সালে নেপাল–যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচে হয়েছিল ১০৪ বল। ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কা–জিম্বাবুয়ে ম্যাচ শেস হয়েছিল ১২০ বলে।
সিরিজ সেরা হয়েছেন ভারতীয় লেগ স্পিনার কুলদিপ যাদব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ১৫.২ ওভারে ৫০ (নিশানকা ২, পেরেরা ০, মেন্ডিস ১৭, সামারাবিক্রমা ০, আসালাঙ্কা ০, ধরাঞ্জয়া ৪, শানাকা ০, ভেল্লালাগে ৮, হেমন্ত ১৩*, মাদুশান ১, পাতিরানা ০; অতিরিক্ত ৫; বুমরাহ ৫-১-২৩-১, সিরাজ ৭-১-২১-৬, পান্ডিয়া ২.২-০-৩-৩, কুলদিপ ১-০-১-০)।
ভারত: ৬.১ ওভারে ৫১/০ (কিষান ২৩*, গিল ২৭*; অতিরিক্ত ১; মাদুশান ২-০-২১-০, পাথিরানা ২-০-২১-০, ভেল্লালাগে ২-০-৭-০, আসালাঙ্কা ০.১-০-১-০)।
ফল: ভারত ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ সিরাজ (ভারত)।
ম্যান অব দা সিরিজ: কুলদিপ যাদব (ভারত)