ঢাকা   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Image Not Found!

সর্বশেষ সংবাদ

  আ.লীগ সমর্থককে জোর করে লিফলেট দিচ্ছে বিএনপি নেতারা (রাজনীতি)        স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে নাহিয়ানের, ফেব্রুয়ারিতে উৎক্ষেপণ হবে রকেট (বাংলাদেশ)        নির্বাচন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ: ওবায়দুল কাদের (জাতীয়)        ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সবাই আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে:রিজভী (জাতীয়)        আপিলে এ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ১৬৮ জন (জাতীয়)        প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে রওশন এরশাদ (জাতীয়)        মেজর হাফিজকে বিদেশ যেতে দেয়নি সরকার (জাতীয়)        ভয়ংকর টর্নেডোয় তছনছ টেনেসি, নিহত কমপক্ষে ৬ (জাতীয়)        ২০০৯ সালের পরে শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন : ওবায়দুল কাদের (জাতীয়)        অবরোধের সমর্থনে গুলশানে শ্রাবণের নেতৃত্বে মশাল মিছিল (জাতীয়)      

বিএনপির কৌশল বুঝে এগোবে আওয়ামী লীগ

Logo Missing
প্রকাশিত: 07:16:07 am, 2023-10-24 |  দেখা হয়েছে: 2 বার।

সরকার পতনে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ এই মূহুর্তে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। স্বভাবতই ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগও বিএনপির ওই কর্মসূচিটি মোকাবেলায় ‘তৎপর’ হয়ে উঠেছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো এ কর্মসূচি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ থেকে নেয়া হয়েছে কৌশল। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির কর্মসূচি বুঝে কর্মসূচি দিয়ে এগিয়ে যেতে চায় আওয়ামী লীগ। বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে দলীয় সকল নেতা-কর্মীদের সতর্ক অবস্থায় থাকবে বলা হয়েছে। দলটির নেতারা মনে করেন, সরকারের শেষভাগে এসে বিএনপি যে এমন একটি কর্মসূচি নিবে তা দলটির অনুমেয় ছিল। একই দিন আওয়ামী লীগও বড় আকারের সমাবেশ করবে। যার আকার ১০ লাখ টার্গেটের কথা বলছেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। আওয়ামী লীগ নেতারা এত বলছেন, সরকার পতনে বিএনপির এই কর্মসূচি ভেস্তে দিতে আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক কর্মসূচি হাতে নেয়া হতে পারে। আগামী ২৫শে অক্টোবর সে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপিকে চাপে রাখতে ২৮ অক্টোবরই বড় সমাবেশ থাকবে আওয়ামী লীগেরও। এর বাইরে দল ঢাকায় পাড়ায় মহল্লায় সতর্ক অবস্থানের থাকার পাশাপাশি ঢাকা মহানগরেরও একাধিক কর্মসূচি আসতে পারে। এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের নেতারা। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দলটির বড় শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশটি হবে গুলিস্থান এলাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররাম দক্ষিণ গেটে। যার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে একাধিক সভা করেছে উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ হলেও পল্টন মোড় থেকে গোলাপ শাহ মাজার পর্যন্ত সড়ক নিজেদের নিয়ন্ত্রণেই রাখতে চায় দলটি। ঢাকা মহানগরের নেতা জানিয়েছেন, সমাবেশে বায়তুল মোকাররাম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২টায় ওই সমাবেশ শুরু হবে। গত শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ তারিখ আমাদেরও কর্মসূচি আছে, এ দিন মহাযাত্রা আমাদেরও আছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের মহাযাত্রা শুরু হবে। বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জনতার ঢল নামবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল (২৫ অক্টোবর) বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে কর্মসূচি ঠিক করতে দলের ঢাকার নেতাদের পাশাপাশি ঢাকার সংসদ সদস্যরা, ঢাকার আশে-পাশের সংসদ সদস্য ছাড়াও ঢাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসবে আওয়ামী লীগ। তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে হতে যাওয়া ওই বৈঠকে থাকবেন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতারাও। ওই বৈঠক থেকে দলীয় কর্মসূচি একাধিক হবে কীনা সে বিষয়টি ঠিক করা হবে। ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের পাশাপাশি নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোও।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিএনপির এই কর্মসূচিতে নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করে একে ছোট করার যৌথ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে সরকার ও আওয়ামী লীগ থেকে। সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েক দিন ধরে যে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির যেসব নেতা লোক জমায়েতে ভূমিকা রাখেন এবং কর্মীদের ওপর যাঁদের প্রভার রয়েছে এসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে কড়া পাহারাও বসানো হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের কৌশল থাকবে বিএনপি জমায়েত ছোট করা। এ জন্য যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তা দল থেকে নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচি ঢাকার রাজপথে না করতে দিয়ে ঢাকার যে কোন মাঠে করার অনুমতি দেয়ার কৌশল নেয়া হতে পারে। এতে করে বিএনপি রাজপথে বসে পরার আশঙ্কা আর থাকবে না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ করেছে। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সেখানে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্য কোনো মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। এর পর বিএনপি অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করতে চাইলে ২৮ অক্টোবরের পরে গত ২৯ জুলাই বিএনপির কর্মসূচি যে পরিণতি হয়েছিল তাই হবে। সে দিনের পর বিএনপিকে ঢাকায় দাঁড়াতে নাও দেওয়া হতে পারে। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ২৮ অক্টোবরের পরিণতি গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের মত হবে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ঢাকায় দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি বাড়াতে গত ১৮ই অক্টোবর দলের দুই সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে দায়িত্ব নেয়া হয়েছে। দলীয়ভাবে তাদের দায়িত্ব থাকতে দলটি ঢাকার সাংগঠনিক গতি বৃদ্ধিতে যা যা করনীয় তা করা। যার জন্য আগামীতে বৈঠক করবেন তারা।

গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় ঢাকায় আওয়ামী লীগের শক্তিবৃদ্ধির জন্য দায়িত্ব পাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামী ২৮ তারিখ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগমের মাধ্যমে বিএনপি’র কবর রচনা করা হবে। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে স্বপ্ন দেখছে সেই স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করে দিতে হবে। ঢাকা শহর থাকবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের দখলে। এ সময় তিনি বিএনপিকে মোকাবিলার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান করেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য হয়তো বিএনপি ধরেই নিয়েছিল ওই দিন ঢাকা ফাঁকা থাকবে। কিন্তু বিএনপি সেই সুযোগ পাবে না। কারণ ঢাকার রাজপথ কোন মতে বিএনপির হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে না। দলীয় নেতাদের একটি অংশ শুধু চট্টগ্রামে যাবেন। এর বাইরে দলের একটি বড় অংশ ঢাকায় থেকে যাবেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা মনে করে, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে লাগাতার কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। এ জন্য ওই দিন বিএনপির যে সকল নেতা-কর্মী ঢাকায় আসবে তাদের ঢাকায় রেখে দিতে চাইবে দলটি। এর পর আগামী ৭ নভেম্বর কিংবা তারও পর পর্যন্ত কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে বে কায়দায় ফেলার চেষ্টা করবে বিএনপি। কিন্তু এ অবস্থায় যাতে বিএনপি সরকারকে না ফেলতে পারে সে জন্য একাধিক কৌশল ঠিক রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের মহানগর উত্তর সূত্র জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি ঠিক করতে গত রোববার সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ছিল ওয়ার্ড কমিটি, থানা-ওয়ার্ডের নেতা ও দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বর্ধিত সভা ও সংসদ-সদস্যকে নিয়ে সভা। সভা থেকে মহানগরের প্রতিটি ইউনিটে-ইউনিটে মিছিলের মাধ্যমে এলাকায় দখলে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাদের বৈঠকে আগামী ২৮ তারিখ বিএনপির মহাসমাবেশের বিপরীতে দলীয় কার্যক্রম কী হবে- সে বিষয়ে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নানক দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নগরের প্রত্যেকটা ইউনিট- ওয়ার্ড নেতাকর্মীরা আরামের ঘুম হারাম করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যেতে হবে।

২৮ অক্টোবরের কর্মসূচি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, ২৮ অক্টোবর ঘিরে আমরা কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ জন্য গতকাল রোবার সভা করা হয়েছে। এর বাইরে ২৫ অক্টোবর আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সে সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। একই সঙ্গে ঢাকার আশপাশের জেলা ও উপজেলার নেতা ও দলীয় সংসদ-সদস্যরাও এতে উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবরে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে আজ ২৪ অক্টোবর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ইনকিলাবকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানায় বৈঠক করে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেছি। যাতে বিএনপি কোনভাবেই যে দিন সহিংসতা না করতে পারে। আগামী ২৪ অক্টোবর আবার মায়া ভাইয়ের (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) সঙ্গে বৈঠক করবো। এর পর ঢাকার সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি, আমরা ইউনিট থেকে ওয়ার্ড প্রত্যেকটি পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবো।

জানা গেছে, ২৯ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন পেছানো হচ্ছে। ওই দিন শাপলা চত্বরে বড় সমাবেশের কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা। এখন মেট্রোরেলের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ইনকিলাবকে বলেন, যে দল (বিএনপি) বলে পশ্চিমারা তাদের সাহস যোগাচ্ছেন, তারা তো জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। তারা সমাবেশের নামে অরাজকতা করতেই পারে। আর তা হলে তো আওয়ামী লীগ চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা আমাদের মত সতর্ক অবস্থায় থাকবো। সমাবেশ করবো।

বিএনপির মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বিএনপি আসলে চাইছে যে কোনোভাবে নির্বাচন প- করতে। সে জন্য তারা দখল করতে চায়। তারা ঢাকার বাইরে থেকেও লোকজন নিয়ে আসছে। এটা করে তারা নির্বাচন কমিশনসহ নানা সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে হামলা ও অরাজকতা করতে চায়। আমরাও আমাদের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট নেতাদের সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপি যদি অরাজকতা করে তার জন্য আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি আছে। যেখানে অরাজকতা করবে সেখানেই দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। সেখানে যে দাওয়াই (ওষুধ) লাগে তা দেওয়া হবে। তবে বিএনপির টানা কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামী লীগ কি করবে জানতে চাইলে বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে তো জনগণ নেই। তারা কিভাবে টানা কর্মসূচি করবে। শুধু লোক ভাড়া করে, ম্যাসেজ দিয়ে হোটেলে রেখে কি আন্দোলন হয়। বিএনপি নেতারা যে কাগুজে বাঘ এটা তাদের কর্মীরাও জানে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ইনকিলাবকে বলেন, ২৮ তারিখে কিছুই হবে না। ২৮ তারিখের পর ২৯ তারিখ হবে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি যাতে নাশকতা না করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সব সময় সতর্ক আছি। সব সময় সতর্ক থাকবো। এসব বিষয়টি দেখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। আর আমরা আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবো।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ইনকিলাবকে বলেন, ২৮ অক্টোবর আমাদের সংগঠনের কোন আলাদা কর্মসূচি থাকবে না। দল যেভাবে নির্দেশনা দিবে আমরা সেভাবেই কর্মসূচি পালন করবো।

এ দিকে গতকাল সোমবার দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়–য়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে সমাবেশের ডাক দিয়েছে তাকে ‘সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে ওবায়দুল কাদের তিনি বলেছেন, বিএনপির ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবর তথাকথিত সমাবেশের নামে জনমনে ভীতি সঞ্চার করছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শান্তিকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ সর্বদা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনেই যথাসময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি। অথচ বিএনপি নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে, উস্কানি দিয়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলের জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বিএনপির এই অপতৎপরতার কারণে যদি গণতান্ত্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট হয় তার দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে।

ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য ও বিবৃতিতে বার বার উগ্র-আস্ফালন দেখিয়ে যাচ্ছে; যা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ^াস করে না বলেই তারা দেশ ও জনগণ নিয়ে যে কোনো ছেলে খেলা খেলতে পারে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য নির্লজ্জের মতো কাউকে ‘ভগবান’ মেনে তারা আজ বিদেশি প্রভুদের করুণা ভিক্ষা করছে। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ব্যাহত এবং অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার পথ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণœ রাখতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, বিএনপির ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবর তথাকথিত সমাবেশের নামে জনমনে ভীতি সঞ্চার করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তিকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করবে। আওয়ামী লীগের নেতাকার্মীরা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্থিতিশীল পরিবেশ কোনোভাবে ব্যাহত হতে দেবে না। জনগণের স্বাধীনতা, মুক্তি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের অজ¯্র নেতাকর্মী আত্মত্যাগ করেছে। এবারও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রাকে সমুন্নত রাখতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যে কোনো আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।